এবিএনএ : আওয়ামী লীগ সরকার গত ৭ বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
তিনি বলেছেন, “আজ উন্নয়নের নামে বড় বড় প্রকল্প তৈরি করে তারা ভাগ-ভাটোয়ারা করছে। বিদেশে টাকা পাচার করছে। আওয়ামী লীগ সাত বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে।”
মে দিবস উপলক্ষে রোববার ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক শ্রমিক সমাবেশে এ কথা বলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
পানামা পেপারসে যাতে ‘নাম না আসে’, সেজন্য ক্ষমতাসীনরা এখন ‘ধরাধরি’ করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সরকারের সমালোচনায় খালেদা বলেন, “কথায় কথায় উন্নয়ন বলে। কী উন্নয়ন তারা করেছে? যতো উন্নয়ন করেছে তার বেশি তারা চুরি করেছে।”
বর্তমান সরকার ‘জোর করে’ ক্ষমতায় বসে আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশকে তারা মনে করে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি।”
খালেদা জিয়া বলেন, শেখ হাসিনার সরকার সকল দল ‘বন্ধ করে’ দিয়ে ‘একদলীয় শাসন’ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে।
“তারা নতুন নতুন আইন তৈরি করছে, যাতে আজীবন ক্ষমতায় থাকতে পারে।”
বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে ‘কখনেই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না’ মন্তব্য করে বিএনপিনেত্রী বলেন, “হাসিনা যে রকম, নির্বাচন কমিশনও সেই রকম।”
মে দিবসের শিক্ষা নিয়ে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন বেগবান করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “মে দিবস রক্ত দিয়ে অধিকার আদায়ের ইতিহাস। মে দিবসের শিক্ষা নিয়ে আমাদের অধিকার আদায় করতে হবে।”
গত মার্চে কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে দল গোছানোর প্রক্রিয়া শুরুর পর এটাই ছিল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রথম জনসভা।
৫১ মিনিটের বক্তব্যে তিনি দেশের পরিস্থিতি, শ্রমিকদের অবস্থা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন এবং সরকারবিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর ‘নির্যাতন-নিপীড়ন’, সরকারের বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতি-অপশাসন’, প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের অ্যাকাউন্টে ‘সন্দেহজনক উৎসের অর্থ’ থাকার অভিযোগ তোলেন।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির শ্রমিক সংগঠন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের উদ্যোগে এই সমাবেশে ঢাকা ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, টঙ্গী ও সাভার থেকে আসা বিভিন্ন কারখানার শ্রমিক ও বিএনপি নেতাকর্মীরা অংশ নেন। ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন তারা।
শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে বেলা দেড়টার দিকে সমাবেশ শুরু হয়। খালেদা জিয়া পৌঁছালে নেতাকর্মীরা করতালি দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। হাত নেড়ে তাদের অভিনন্দনের জবাব দেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
সমাবেশ উপলক্ষে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত ডিজিটাল ব্যানার ও ফেস্টুনে সাজানো হয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশের এলাকা। সভামঞ্চের সামনেই বড় হরফে লেখা দেখা যায়- ‘আমি একজন শ্রমিক এবং এ পরিচয়ে আমি গর্বিত’।
এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা এড়াতে উদ্যান এলাকায় মোতায়েন করা হয় বাড়তি পুলিশ। ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিউশন মিলনায়তনে পুলিশের জলকামাল, প্রিজন ভ্যানও প্রস্তুত দেখা যায়।
এর মধ্যেও খালেদা জিয়া পৌঁছানোর ঘণ্টাখঅনেক আগে মঞ্চের পশ্চিম দিকে সামনের অংশে বসা নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে পানির বোতল ছোড়াছুড়ি হয়। পরে নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
শ্রমিক সমাবেশ উপলক্ষে বিএনপির চিকিৎসক সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন (ড্যাব) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল কলেজ ছাত্রদল শাখা উদ্যানের এক পাশে দুটি মেডিকেল ক্যাম্প খোলে। সেখান থেকে নেতা-কর্মীদের পানি সরবারহ করা হয়।